তারাবির নামাজের দোয়া, মোনাজাত বাংলা ও আরবি [ছবি, অর্থ সহ]
তারাবির নামাজ মুসলমানদের ইবাদতের মধ্যে অন্যতম। বছরের মাত্র একটি মাস তথা রমজানে এশার নামাজ এর পরে তারাবির নামাজ পড়া হয়। আজকে আমরা আলোচনা করব তারাবির নামাজের দোয়া এবং তারাবির নামাজের মোনাজাত নিয়ে।
তারাবির আভিধানিক অর্থই হচ্ছে বিশ্রাম নেয়া, তারাবির প্রতি চার রাকাত পর পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হয়। তখন আমরা যেকোনো ধরনের ইবাদতে মশগুল থাকতে পারি যেমন জিকির-আজকার, দোয়া-দরুদ এবং বিভিন্ন নফল নামাজ ইত্যাদি। আর যদি আপনি কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করেন তাহলে একটু আস্তে করার চেষ্টা করবেন যেন অন্যজনের ইবাদতে ক্ষতি না হয়।
তারাবির নামাজের দোয়া
তারাবির নামাজের জন্য যে, প্রতি চার রাকাত পর পর তারাবিহা (বিশ্রাম) করা হয় এতে কোন নির্দিষ্ট তারাবির নামাজের দোয়া নেই, তবে আমরা প্রচলিত দোয়াটি পড়তে পারি।
سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
বাংলা উচ্চারণ: সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।
হ্যাঁ, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই দোয়াটির সাথে তারাবির নামাজের কোন সরাসরি সম্পর্ক নেই। এই দোয়াটি না পড়লেও তারাবির নামাজ পুরোপুরি আদায় করা যাবে। তবে, এটি একটি জনপ্রিয় দোয়া যা অনেক মসজিদে চার রাকাত পর পর পড়া হয়। রোজার সময়সূচী সম্পর্কেও জানা গুরুত্বপূর্ণ।
যদি তারাবির নামাজের দোয়াটি কেউ মুখস্থ না জানেন, তাহলে দেখে দেখেও পড়তে পারেন। এছাড়াও, তারাবিহার সময়ে যেকোনো ধরনের দোয়া-দরুদ, তাসবিহ, তাহলীল, এবং ইস্তেগফার করা যাবে।
তারাবির নামাজের দোয়া হাদিস
শরীয়ত কিংবা কোরআন হাদিসের পক্ষ থেকে তারাবির নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোন দোয়া উল্লেখ নেই। প্রত্যেক মুসল্লি তার ইচ্ছে অনুযায়ী যে কোন ইবাদত বন্দেগী করতে পারে যেমন তসবি-তাহলীল এবং কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি।
তবে হ্যাঁ, যদি কেউ উল্লেখিত তারাবির দোয়াটি পড়তে চায় তাহলে সেটাও পারবে কোন সমস্যা নেই। এই দোয়াটি সুন্নত মনে করে পড়া উচিত নয়, এবং সেই সাথে দলবদ্ধ হয়েও এই দোয়াটি পড়বে না।
তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া
’সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’
আজ থেকে শুরু হচ্ছে তারাবির নামাজ, এই নামাজের প্রতি চার রাকাত পর পরে একটা দোয়া পড়া হয় তবে এটা নির্দিষ্ট নয়। এখানে অন্যান্য দোয়াও পরাজয় যেমন গুনাহ মাফের দোয়া, হাজতের দোয়া ইত্যাদি। তবে আপনি উপরে উল্লেখিত سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ۔۔۔ এই দোয়াটিও করতে পারেন এটাই সচরাচর বিভিন্ন মসজিদে পড়তে দেখা যায়।
তারাবির নামাজের দোয়া হাদিস
আমরা যে সাধারণত তারাবির নামাজে চার রাকাত পর পর একটা দোয়া করি এটা কোরআন হাদিস দ্বারা সাবেত নয়। তবে, প্রতি চার রাকাত পর পর যে তারাবিহা করা হয় এখানে যেকোনো ধরনের দোয়া নামাজ এবং এখানে যেকোনো ধরনের দোয়া, নামাজ এবং কোরআন তেলাওয়াত করা যায়।
যদি আমরা এটা মনে করে থাকি যে, যে দোয়াটি আমাদের বাংলাদেশের মসজিদের সচরাচর পড়া হয়, এটা কোরআন হাদিস যারা সাবেত তাহলে এটা ভুল ধারণা। তবে আপনি কুরআন-হাদিস দ্বারা সাবেত যে কোন দোয়া এই সময় পড়তে পারেন।
তারাবির নামাজের মোনাজাত
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস’আলুকা আল-জান্নাতা ওয়া না’উযুবিকা মিনান্নার, ইয়া খালিকাল-জান্নাতি ওয়ান্নার। বিরহমাতিকা ইয়া আ’যীযু ইয়া গফ্ফারু ইয়া কারীমু ইয়া সাত্তারু ইয়া রহীমু ইয়া জাব্বারু ইয়া খালিকু ইয়া বারু। আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নার ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ
হে আল্লাহ, আমরা তোমার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই। হে জান্নাত ও জাহান্নামের স্রষ্টা, তোমার রহমতের মাধ্যমে। হে পরাক্রমশালী, হে ক্ষমাশীল, হে দানশীল, হে পর্দাশীল, হে দয়ালু, হে জবরদস্ত, হে স্রষ্টা, হে নেককার। হে আল্লাহ, আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী। তোমার রহমতের মাধ্যমে, হে সর্বাপেক্ষা দয়ালু।
তারাবির নামাজে কি কি দোয়া?
কোরআন হাদিসে তারাবির নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোন দোয়া নেই তবে ’সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি….’ এই দোয়াটি পড়তে পারবে প্রতি চার রাকাত পর পর।