নবীর-যুগে তারাবী নামায
বর্তমান সময়ে তারাবির নামাজ কয় রাকাত, কিভাবে পড়তে হয় এবং তারাবি নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর মন্তব্য রয়েছে। কেউ বা ৮ রাকাত পড়ে আবার কেউ ২০ রাকাত, আসলে কোনটা সঠিক। এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদেরকে নবীর যুগে তারাবির নামাজ কি রকম ছিল এ বিষয়টা জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে আসি:
উন্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) বলেন- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের এক রাতে মসজিদে তারাবী পড়লেন। সাহাবীগণও তাঁর সঙ্গে নামাযে শামিল হলেন। দ্বিতীয় রাতে মুকতাদী- সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। এরপর তৃতীয় বা চতুর্থ রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীর জন্য মসজিদে আসলেন না। সকালে সবাইকে লক্ষ করে বললেন, ‘আমি তোমাদের আগ্রহ ও উপস্থিতি লক্ষ করেছি, কিন্তু এ নামায তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবে এই আশঙ্কায় আমি তোমাদের কাছে আসিনি’।” (সহীহ মুসলিম: ১/২৫৯)
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘কিয়ামে রমযানে’র প্রতি উৎসাহিত করতেন, তবে তিনি তা অপরিহার্য করেননি। তিনি বলতেন, ‘যে রমযানের রাতে ঈমানের সঙ্গে ছওয়াবের আশায় দণ্ডায়মান হয় তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ নবী-যুগে, আবু বকর সিদ্দীক (রা.)-এর খিলাফতকালে এবং উমর (রা.)-এর খিলাফতের প্রথম দিকে এই অবস্থাই বিদ্যমান ছিল।” (সহীহ মুসলিম: ১/২৫৯)
উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে জানা যাচ্ছে যে,
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু তিন বার মসজিদে এসে জামাতের সঙ্গে তারাবী পড়েছেন।
- পুরা রমযান তারাবী পড়া অত্যন্ত ছওয়াবের কাজ। এর দ্বারা নামাযীর গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবী নামাযের রাকাআত-সংখ্যা নির্ধারণ করেননি।
ইবনে তাইমিয়া বলেন- যে মনে করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবী নামাযের রাকাআত-সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন, যা থেকে হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে না, তার ধারণা ভুল।
ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া
আল্লামা শাওকানী বলেন- সারকথা এই যে, তারাবী বিষয়ক সকল বর্ণনা সামনে রাখলে তারাবী নামায এবং তা একা বা জামাতে আদায় করার প্রমাণ পাওয়া যায়, কিন্তু এ নামাযের সুনির্দিষ্ট রাকাআত-সংখ্যা বা বিশেষ কিরাআত নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত নয়।
নায়লুল আওতার