শবে বরাতের নামাজের নিয়ম কানুন, দোয়া ও রাকাত সংখ্যা

২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রোজ রবিবার পবিত্র শবে বরাত অনুষ্ঠিত হবে। এই রাত নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে। আসলেই কি শবে বরাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন নামাজ রয়েছে?

হাদিসে শবে বরাতের নামাজের নির্দিষ্ট কোন নিয়ম উল্লেখ করা হয়নি। তবে, এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের ক্ষমা ঘোষণা করে। এই রাতে নামাজ পড়েছেন এ বিষয়ে হাদীসে উল্লেখ আছে। তাই আমরাও বিভিন্ন নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য এবং ক্ষমা প্রার্থনা করব।

শবে বরাতের আমলের গুরুত্বপূর্ণ হলো শিরক, হিংসা-বিদ্বেষ ত্যাগ করা এবং করণীয় ও বর্জনীয় গুলো জানা ও আমল করা। এ রাতে বিশেষভাবে সালাতুত তাওবা (ক্ষমা প্রার্থনার নামাজ) পড়া যেতে পারে। শবে বরাতের নামাজের সংক্ষিপ্ত আলোচনা:

  • নিয়ত: শবে বরাতে যে কোন নফল নামাজ পড়া যায় তাই আপনি ২/৪ রাকাত এভাবে নফল নামাজের নিয়ত করবেন।
  • সময়: যে কোন সময় শবে বরাতের নামাজ অর্থাৎ নফল নামাজ পড়া যায় তবে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম
  • রাকাত সংখ্যা: শবে বরাতের নামাজের নির্দিষ্ট কোন রাকাত সংখ্যা নেই, এই ক্ষেত্রে ২, ৪ রাকাত এভাবে নফল নামাজ পড়া যায়
  • শবে বরাতের নামাজের নিয়ম: কোরআন এবং হাদিসের কোথাও শবে বরাতের নির্দিষ্ট নামাজের কথা উল্লেখ নেই, তবে এ রাতে নফল নামাজ পড়া উত্তম। বিশেষত আমরা সালাতুত তাসবিহ এবং সালাতুত তওবা পড়ার চেষ্টা করবেন।
  • নামাজের পর: নামাজের পরে আমরা কাছে একনিষ্ঠতার সাথে এবং নিজের গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা চাইবো। তাছাড়া আপনার প্রয়োজন, মা-বাবার জন্য দোয়া এবং মৃতদের জন্য দোয়া করবেন।

শবে বরাতের নামাজ

শবে বরাতের নির্দিষ্ট নামাজ এবং রাকাত সংখ্যা কোরআন-হাদিসের কোথাও উল্লেখ। তাই আমরা যার যার ইচ্ছে মতো ২, ৪ এবং যার যত ইচ্ছে নফল এবং অন্যান্য নামাজ পড়তে পারেন। আর আপনার জীবনে যদি কোন কাজা নামাজ থাকে সেটাও পড়ে নিতে পারেন।

আমরা অনেকেই মনে করি, এ রাতে আল্লাহ তা’আলা পুরো বছরের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। এই বলে, আমরা অনেকেই পুরো বছর কোন ফরজ নামাজ না পড়লেও এই রাতে বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীতে মনোযোগ দিই, যেন পুরো বছরের রিজিকটা এক রাতেই নিয়ে ফেলতে পারি।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম হচ্ছে অন্যান্য নফল নামাজের মতই সূরা ফাতেহার সাথে অন্য যেকোনো সূরা পড়বে। তবে এতে কোন রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই, যে যত ইচ্ছে নফল নামাজ পড়তে পারে। আর এতেও নামাজের রাকাত সংখ্যা বজায় রাখতে হবে।

এই নামাজ সম্পর্কে বলে রাখা ভালো যে বা গুরুত্বপূর্ণ এই যে, আমরা যারা shab e barater namaz ৬ রাকাত বা ১২ রাকাত ইত্যাদি নির্ধারণ করে ফেলি আসলে সেটি অগ্রহণযোগ্য এবং কোরআন হাদিস দ্বারা সাবেত নয়। তাই কেউ যদি মনে করে, অন্যান্য তারাবির নামাজ ইত্যাদির মত নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা রয়েছে, তাহলে সেটা বিদআত।

শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

শবে বরাতের নামাজ নফল হিসেবে ২, ৪ এবং যার যত ইচ্ছে পড়তে পারবে। তবে রাকাতের সংখ্যার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যত রাকাত পর্যন্ত পড়া যায় এবং সর্বনিম্ন যত রাকাত পড়া যায় এটা খেয়াল করতে হবে।

শবে বরাতের নামাজ নফল হিসেবে পড়া হয়। নফল নামাজের জন্য কোন নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা নেই, যত ইচ্ছা রাকাত পড়া যায়। তবে, শবে বরাতের রাতে যত বেশি নামাজ পড়া যাবে, ততই উত্তম।

কোরআন ও হাদিসে শবে বরাতের নামাজের রাকাত সংখ্যার স্পষ্ট উল্লেখ নেই। যে হাদিসগুলো পাওয়া যায়, তার মূল ভাব হল এই রাতে আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করেন। তাই, যত বেশি সম্ভব নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।

নফল নামাজের রাকাত সংখ্যা নির্ধারণ করা ভিত্তিহীন এবং গোনাহের কাজ। অনেকেই শবে বরাতের রাতে ৬ রাকাত, ১২ রাকাত, বা অন্য নির্দিষ্ট রাকাত নামাজ পড়ে থাকেন। এই ধারণাটি ভুল।

শবে বরাতের নামাজের দোয়া

শবে বরাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দোয়া হাদিসে প্রমাণিত নেই। তবে, নামাজের পরে আপনি বিভিন্ন দোয়া, যেমন তওবার দোয়া, মাগফিরাতের দোয়া, রিযিক বৃদ্ধির দোয়া ইত্যাদি পড়তে পারেন। নামাজের মধ্যে দোয়া পড়া নিষিদ্ধ, তবে যেসব নামাজে নির্দিষ্ট দোয়া রয়েছে সেগুলো ব্যতীত।

শবে বরাত পালনের নিয়ম

আসলেই কি কোরআন হাদিসের কোথাও শবেবরাত পালন সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন নীতি বা রীতি রয়েছে? আপনি যদি মনে করে থাকেন এটা সত্যি তাহলে আপনি ভুলে আছেন। অর্থাৎ কোরআন হাদিসের কোথাও শবে বরাত পালনের বিষয় নির্দিষ্ট কোন নিয়ম-নীতি নেই।

তবে এই রাতে যেহেতু আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন, তাই এ রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত করাটা প্রশংসনীয়। তবে এই নয় যে, কেউ ঐচ্ছিক ইবাদত ছেড়ে দিলে গুনা হবে।

শবে বরাতের নামাজের সূরা

শাবানের মধ্য রজনী যেটা আমরা শবে বরাত বলে থাকি। এ রাতে সাধারণত মুসলিমগণ বিভিন্ন নফল নামাজ বা ঐচ্ছিক ইবাদত করে থাকে। সাধারণত নফল নামাজ এর মধ্যে নির্দিষ্ট কোন সূরা উল্লেখ নেই। তবে একনিষ্ঠতার সাথে নামাজ আদায় করা উচিত এবং সকলের জন্য প্রয়োজনীয়।

তাই বলে রাখা ভালো যে, নফল নামাজে প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পরে যে কোন সূরা পড়া যাবে, এতে কোন ধরা বাধা নেই। তবে কোরআন শরীফের মধ্যে সূরা এর ক্ষেত্রে যে তরতিব রয়েছে নামাজের ক্ষেত্রেও সেটা ফলো করতে হবে। যেমন আপনি যদি প্রথম রাকাতে সূরা না’বা পড়েন তাহলে দ্বিতীয় বা এর পরের রাকাত গুলোতে পরবর্তী সূরা পড়বেন।

শবে বরাতের নামাজ আছে কি?

শবে বরাতের নির্দিষ্ট নামাজ কোরআন হাদিসের কোথাও উল্লেখ নেই। তবে এ রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত করা উত্তম। ঠিক তারই ভিত্তিতে আমরাও এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়বো।

শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?

যেহেতু এর নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। তাই অন্যান্য নফল নামাজের মতই পড়বো, যার যত ইচ্ছে। এক নিয়তে দুই/চার রাকাত করে যার যত ইচ্ছে পড়া যায়।

 

Similar Posts

7 Comments

  1. আমি নামাজ পড়তে চাই বাট আমার পরতেক টি নামাজের নিয়ম কারন জানি না আমি কোথায় থেকে হেল্প নিতে পারি

    1. এতে আমি আপনাকে রিকমেন্ট করছি, আপনি একটা নামাজের বই নিতে পারেন যেমন “নবীজীর নামাজ”বা দলিলসহ নামাজের মাসায়েল‌। আর আপনি এই বইগুলো কওমি পাঠাগার নামক মোবাইল অ্যাপ থেকে পড়তে পারেন ফ্রিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *