রোজা ভঙ্গের কারণ ও কখন কাফফারা করতে হবে

রোজা ভঙ্গের কারণ রমজান কিংবা রোজার সময় জানার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বিভিন্ন কারণে আমাদের রোজা ভেঙ্গে যায়, মাকরুহ হয়ে যায় যা আমরা নিজেই জানিন। আজকের এই আর্টিকেলে যথাসম্ভব রোজার মাকরুহ, কাফফারা ও রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে যথাসম্ভব আলোচনা করব।

রোজার সময়সূচী অনুযায়ী, প্রতিদিন সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ইত্যাদি কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে, তবে অনুমতি ছাড়া রোজা ভেঙে ফেললে রোজার কাযা বা কাযা-কাফফারা দুটাই ওয়াজিব হতে পারে।

তাই আজকে আমি চিন্তা করলাম, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে কি কি কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং কি কি কারণে রোজার কাফফারা ওয়াজিব হয় এসব বিষয় শেয়ার করতে। রমজানে শুধু তারাবির নামাজ পড়লেই হবে না রোজার নিয়ম মেনে রোজা আদায় করা ফরজ।

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

  • ভুল বশত সঙ্গ-মের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করলে।
  • কারো চাপ সৃষ্টিতে বাধ্য হয়ে রোযা ভঙ্গ করলে।
  • ইনজেকশন পুশ করালে। (তবে ফাতওয়া হল ইনজেকশন দিলে, ঢুস করালে রোজা ভঙ্গ হয় না। (সম্পাদক, -আলাতে জাদীদা: ১৫৩-১৫৪)
  • কানে ঔষধ প্রয়োগ করালে।
  • নাকে ঔষধ প্রয়োগ করালে।
  • পেট অথবা মাথার ক্ষতস্থানে ঔষধ প্রয়োগ করার পর উক্ত ঔষধ পেটে বা মস্তিষ্কে চলে গেলে।
  • পাথর কনা বা লৌহ জাতীয় কোন কিছু কণ্ঠনালীর ভিতর চলে গেলে।
  • ঔষধ বা খাদ্য জাতীয় বস্তু ব্যতীত অন্য কোন দ্রব্য কণ্ঠনালীর ভিতর চলে গেলে।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভর্তি বমি করলে।
  • সেহরীর সময় আছে মনে করে সেহরী খাওয়ার পর সুবহে সাদেক প্রমাণিত হলে।
  • ভুলবশত কিছু খাওয়ার পরে, রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছা করে আরো কিছু খেয়ে ফেললে।
  • সূর্য ডুবে গেছে মনে করে ইফতার করার পর ইফতারের সময় হয়নি বলে প্রমাণিত হলে।
  • দিনের বেলায় ভুলে কোন কিছু খাওয়ার পর রোযা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃত ভক্ষণ করলে।
  • ঘুমন্ত অবস্থায় কণ্ঠনালীর ভিতর পানি প্রবেশ করলে।
  • কোন মহিলা ঘুমন্ত অবস্থায় পাগল বা বেহুশ অবস্থায় থাকলে তার সাথে milon করলে।
  • কেহ যদি রমযানে রোযা রাখা বা না রাখার কোন নিয়তই না করে।

উল্লেখিত বিষয়গুলো রোজা ভঙ্গের কারণ ও কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় না।

বিঃদ্রঃ কোন ব্যক্তি যদি রমযানের রোযার নিয়ত না করে খানা খেয়ে ফেলে তাহলে ইমাম আজম (রহঃ) -এর মতে কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। আর সাহেবাইনের মতে কাফ্ফারা ওয়াজিব হব

যেসব কারণে রোজার কাফফারা ওয়াজিব হবে

  • রোযা অবস্থায় সামনের অথবা পেছন দিয়ে milon করলে।
  • ইচ্ছাকৃত milon কৃতা হলে।
  • ইচ্ছা পূর্বক কিছু ভক্ষণ করলে, চাই তা খাদ্য হোক বা ঔষধ।
  • কোন কিছু পান করলে।

উল্লেখিত বিষয়গুলো রোজা ভঙ্গের কারণ ও কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়।

রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ

  • রোযা অবস্থায় বিনা ওযরে কোন কিছুর স্বাদ গ্রহণ করা।
  • রোযা অবস্থায় কোন কিছু চর্বণ করা মাকরূহ। তবে বাচ্চার জন্য কোন কিছু চর্বণ করা তথা চিবানো প্রয়োজনের কারণে জায়েয।
  • উত্তাপ নিবারনের জন্য গডগড়া করা
  • গরম নিবারনের জন্য নাকে পানি দেয়া
  • গরম নিবারণের জন্য গোসল করা
  • বিজা কাপড় শরীরে জড়ানো ইত্যাদি মাকরূহ।

উপরোক্ত জিনিসগুলো যদি আপনার কাছে পাওয়া যায় তাহলে রোজা মাকরুহ হয়ে যাবে।

রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি

রোজা ভঙ্গের কারণ ১৬টি যা আজকের আর্টিকেলে উপরের দিকে বলা হয়েছে। তবে এছাড়াও আরো থাকতে পারে যা আপনারা বিভিন্ন কিতাব ঘাটাঘাটি করলেই পেয়ে যাবেন। সেই সাথে এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলোর করণে রোজা কাযা এবং কাফফারা দিতে হবে।

নফল রোজা রেখে ভুলে কিছু খেয়ে ফেললে

আপনি যদি রমজানের সময়সূচী অনুযায়ী যেকোনো রোজা থাকা অবস্থায় সেটা নফল হোক বা ফরজ কিছু খেয়ে পেলেন ভুলবশত তাহলে রোজা ভাঙবে না।

রোজা ভঙ্গের নিয়ত

কেউ যদি এমন নিয়ত করে যে, আগামীকাল রোজা রাখবে না তাহলে তার রোজা হবে না। যদিও বা সে সেহরির সময়ে সেহরি খাই। অর্থাৎ কেউ রোজার নিয়ত না করলে তার রোজা হবে না। নিয়ত এই যে ’আমি আগামীকাল রোজা রাখব সেটা ফরজ নফল যাই হোক না কেন’। নিয়ত করতেই হবে।

রোজা ভেঙে গেলে করণীয়

  • ভুলবশত রোজা ভেঙ্গে গেলে: যখন আপনি রোজা রেখেছেন মনে পড়বে, সাথে সাথে আর কিছু খাওয়া বন্ধ করে দিবেন অথবা যে কারণে রোজা ভেঙ্গে যাচ্ছে তা থেকে সরে আসবেন। অর্থাৎ, মনে আসার পরে আর তা করতে পারবেন না।
  • ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙলে: যদি আপনি ইচ্ছাকৃত কিছু খেয়ে ফেলেন বা এমন কাজ করেন যাতে রোজা ভেঙ্গে যায় তাহলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ pdf

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ pdf

রোজা ভাঙ্গার কারণ কয়টি ও কী কী?

রোজা ভঙ্গের অনেকগুলো কারণ রয়েছে, তবে প্রায় সবগুলো ১৫-১৬ টার মধ্যে চলে আসে। আজকের নিবন্ধে যে ১৬টা মত শেয়ার করেছি সেগুলো জেনে নিতে পারেন।

রোজা ভেঙে গেলে কি করব?

রোযা ভেঙ্গে গেলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছু খাওয়া অনুচিত। তাই সূর্যাস্ত পর্যন্ত অন্যান্য রোজা ভঙ্গের কারণ থেকেও নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। তবে পরে কাযা করে নিতে হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *