জোহরের নামাজ কয় রাকাত | johorer namaz koto rakat

জোহরের নামাজ কয় রাকাত- ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম, নামাজ শুধু আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রতীকই নয়, বরং আমাদের আত্মার প্রশান্তিরও উৎস। বেলা দুপুরের জ্বলন্ত রোদের মাঝে আদায় করা জোহরের নামাজ আমাদের ব্যস্ত জীবনে কিছুক্ষণের জন্য আল্লাহর আশ্রয়ে শান্তির স্পর্শ অনুভব করার সুযোগ করে দেয়।

সূর্য যখন দিগন্তের ঠিক মাঝখানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং একটু ঝুঁকে যায়, তখনই জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। এই সময় আমাদের সকল কর্ম থেকে বিরত থেকে আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়া উচিত। চার রাকাআত ফরজ এবং অন্যান্য সুন্নত এবং নফল নামাজ নিয়ে জোহরের নামাজ সম্পন্ন হয়।

শুধু আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য নয়, আমাদের নিজস্ব উপকারের জন্যও আমাদের উচিত নিয়মিত জোহরের নামাজ আদায় করা। এই নামাজ আমাদের মনকে শান্ত করে, আমাদের চিন্তাভাবনাকে স্পষ্ট করে এবং আমাদের জীবনে আল্লাহর আশীর্বাদ নিয়ে আসে।

এই ব্লগ পোস্টে আমরা জোহরের নামাজের রাকাআত সংখ্যা সম্পর্কে আলোচনা করবো। এছাড়াও, জোহরের নামাজের সাথে জড়িত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আমাদের আলোচনার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আর অবশ্যই এশা নামাজ কত রাকাত জানতে ভুলবেন না।

জোহরের নামাযের রাকাআত সংখ্যা

জোহরের নামাজ পূর্ণতা পায় ১২ রাকাআত নামাজের মাধ্যমে। এই দশ রাকাআত ভাগ করা হয়েছে নিম্নরূপ:

  • চার রাকাআত সুন্নত: যা নামাজের আগে পড়া হয়।
  • চার রাকাআত ফরজ: যা নামাজের মূল অংশ (ফরজ)।
  • দুই রাকাআত সুন্নত: যা ফরজের পরে পড়া হয়।
  • দুই রাকাআত নফল: যা সুন্নতের পরে পড়া হয়।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের আগের চার রাকাআত এবং ফজরের আগের দুই রাকাআত কখনো ছাড়তেন না।’ (সহীহ বুখারী: ১/১৫৭)

উন্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে হাবীবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- যে জোহরের আগের চার রাকাআত ও জোহরের পরের চার রাকাআত নিয়মিত আদায় করে আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নামের আগুনের জন্য হারাম করে দেন।’ (সুনানে তিরমিযী: ১/৯৮)

হযরত আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা থেকে জোহরের আগের চার রাকাআত এবং ফজরের আগের দুই রাকাআতের প্রমাণ পাওয়া গেল। এগুলো হল সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কেননা, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো তা পরিত্যাগ করেননি।

আর হযরত উম্মে হাবীবা (রা.)-এর রেওয়ায়াতে জোহরের পরের চার রাকাআতের ফযীলত পাওয়া গেল। এর মধ্যে দুই রাকাআত হচ্ছে সুন্নতে মুয়াক্কাদা আর দুই রাকাআত নফল।

জোহরের আগের চার রাকাআত সুন্নত যদি সময়মতো আদায় করা না হয় তাহলে নামাযের পরে তা আদায় করবে।

বই- নবীজীর নামাজ

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- কখনো যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের আগের চার রাকাআত সুন্নত সময়মতো পড়তে সক্ষম না হতেন তাহলে ফরয নামাযের পরতা আদায় করতেন।” (জামে তিরমিযী: ১/৯৭)

জোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?

সুন্নত মুয়াক্কদাহ হলো সেইসব আমল যা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিয়মিতভাবে পালন করেছেন এবং তা পালনের জন্য উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। তবে, তা ফরজের মতো বাধ্যতামূলক নয়। সুন্নত মুয়াক্কদাহকে বিনা-উজ্জর মুস্তাকিল তরক করা অর্থাৎ কোনো কারণ ছাড়াই নিয়মিতভাবে সুন্নত মুয়াক্কদাহ ছেড়ে দেওয়া মাকরুহ তাহরিমী। এর অর্থ হলো, এটি করলে গোনাহ্‌ হবে। সুতরাং যোহরের চার রাকাত সুন্নত নিয়মিত কোন কারণ/ওজর ছাড়া ছেড়ে দিলে গুনা হবে।

জোহরের রাকাত কয়টি?

চার রাকাআত সুন্নত, চার রাকাআত ফরয, দুই রাকাআত সুন্নত, দুই রাকাআত নফল। মোট যোহরের রাকাত ১২ টি।

উপসংহার- আজকের এই আর্টিকেলে আমি যথাযথ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি জোহরের নামাজ কয় রাকাত এই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত। আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন এবং আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *