ঈদের নামাজের নিয়ম [তাকবীর, নিয়ত, রাকাত] 

ঈদের নামাজের নিয়ম
ঈদের নামাজের নিয়ম

ঈদের আনন্দকে পূর্ণতা দিতে ঈদের নামাজে শরীক হবার কোনো বিকল্প নেই। এই নামাজ আদায়ে জানতে হবে ঈদের নামাজের নিয়ম, ঈদের নামাজ কি ওয়াজিব সে-সম্পর্কিত তথ্য, মহিলাদের ঈদের নামাজ আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চয়তা। পুরোটা জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

ঈদের নামাজ পরিচিতি

ঈদুল ফিতর এর নামাজ দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এবং ঈদ উল আযহা এর নামাজ জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আদায় করে থাকেন। এই নামাজ কে কেন্দ্র করে কেন্দ্র করে ঈদগাহে সম্মিলিতভাবে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়, আর সেই বিশেষ নামাজকেই ঈদের নামাজ বলা হয়ে থাকে। মূলত খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা যেকোনো স্থানেই এই ঈদের নামাজ পড়া যায়। 

তবে শর্ত একটাই এবং সেটি হলো এই ঈদের নামাজ পড়তে হবে সরাসরি জামাতের সাথে। জামাত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করলে কখনোই তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন যেভাবে

ঈদের নামাজ কি? 

কোনো আজান ও ইকামত ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে যে নামাজের নীতি রয়েছে তাকে মূলত ঈদের নামাজ বলা হয়ে থাকে। এই ঈদের নামাজ আদায় করতে হয় জুমার নামাজের মতো করেই। যেকোনো প্রয়োজন পড়ে উচ্চ আওয়াজে কোরআন তিলাওয়াতের। সাধারণ জুমার নামাজ আর ঈদের নামাজে যদি কোনো পার্থক্য খোঁজেন সেক্ষেত্রে বলবো ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ৬ টি তাকবিরের প্রয়োজন পড়ে, যা জুমার নামাজে প্রয়োজন পড়ে না। 

মনে রাখবেন যেহেতু ঈদের নামাজের নিয়ম স্বাভাবিক নামাজের মতো নয় সেহেতু এই নামাজ আদায়ের পূর্বে অবশ্যই ঈদের নামাজের নিয়ত এবং ঈদের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যা জানতে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

ঈদের নামাজের আরবি নিয়ত

নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতা সালাতি ঈদিল ফিতর, মায়া ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

ঈদের নামাজের নিয়ত বাংলায়

আপনি চাইলে ঈদের নামাজের নিয়ত আরবিতে পড়ার পরিবর্তে বাংলাতেও পড়তে পারেন। নিচে ঈদের নামাজের নিয়ত বাংলায় উপস্থাপন করা হলো: 

আমি ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে ঈদুল ফিতরের ২ রাকাত ওয়াজিব নামাজ ৬ তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি।

ঈদের নামাজের নিয়ম 

শুরুতেই বলেছি ঈদের নামাজ পড়তে হয় আজান এবং ইকামত ছাড়া ২ রাকাত করে। এক্ষেত্রে নিচের নিয়মগুলি মাথায় রাখতে হবে: 

  • আমরা আগেই বলেছি ঈদের নামাজ জামাতে শর্ত এজন্য একজন ইমাম ঈদের নামাজে পড়াবে।
  • ঈদের নামাজের কিরাতগুলি অবশ্যই জোরে জোরে পড়তে হয়। 
  • এই নামাজের প্রথম রাকাতে তাকবীরে তাহরিমা, ছানা পড়ার পর দিতে হবে অতিরিক্ত আরো ৩ তাকবির। 
  • এবারে সাধারণ নামাজের রাকাতের মতো করে আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং এর সাথে অন্য যেকনো পছন্দের একটি সূরা মেলাতে হবে। 
  • সূরা মিলিয়ে স্বাভাবিক নামাজের মতো রুকু এবং সেজদা করার পর দ্বিতীয় রাকাতে এসে ইমামের কিরাত পড়া শেষ করার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে ইমাম বাকি ৩ টি তাকবির দেবেন এবং চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে চলে গিয়ে নামাজ শেষ করবেন। 
  • এবার স্বাভাবিকভাবে নামাজ শেষ করে ইমাম মিম্বারে উঠার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। তিনি যে ২ টি খুৎবা দেবেন তা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। এরপর খুৎবা শেষ হলে একে-অন্যের সাথে কুশলাদি বিনিময় করতে করতে মসজিদ ত্যাগ করবেন। 

বি: দ্র: ইমাম সাহেব যথাযথ চেষ্টা করবেন এই নামাজের প্রথম রাকাতে আল আ»লা পড়া আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল গাশিয়া পাঠ করতে কেননা এটা সুন্নত।

faq

মহিলাদের ঈদের নামাজ আছে কি? 

ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর নিকট নারীদের ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করা ফেতনার আশঙ্কায় মাকরূহ। এরপরেও যদি কেউ আদায় করে তাহলে সেটা নফল হবে।

ঈদের নামাজ কয় রাকাত?

ঈদের নামাজ ২ রাকাত। আর এই নামাজে কোনো আযান বা ইকামতের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। 

ঈদের নামাজ কি ওয়াজিব?

হ্যাঁ! ঈদের নামাজ ওয়াজিব। যাদের জন্যে জুমার নামাজ ওয়াজিব তাদের জন্যে ঈদের নামাজও ওয়াজবি। তবে অনেকেই মনে করেন ঈদেে নামাজ বুঝি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যেই ওয়াজিব! যা পুরোপুরি ভুল ধারণা। 

ঈদের নামাজ কয় তাকবীর?

ঈদের নামাজ ৬ তাকবির। ২ রাকাতে ৩ বার করে এই তাকবীর দিতে হবে।

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম পুরুষদের ঈদের নামাজের নিয়মের মতোই। তবে মসজিদের না গিয়ে এই নামাজ কারো বাড়িতে জামাত করে পড়লে তা বিদাত হিসাবে গণ্য হবে। যা কখনোই করা যাবে না। 

সারকথা

আজকের আর্টিকেল থেকে এটাই বুঝলাম ঈদের নামাজের জন্য জামাত শর্ত এবং ঈদের নামাজ প্রায় জুমার নামাজের মতই তবে নিয়ত এবং অতিরিক্ত ছয় থাকবে ছাড়া যা ঈদের নামাজে দিতে হয়। এবং মহিলাদের জন্য ঈদের নামাজ পড়া জরুরী নয় এমনকি ফেতনার আশঙ্কা হলে না পড়াটাই উত্তম। এবং ইমাম আবু হানিফ রহমাতুল্লাহি আলাই মাকরূহ বলেছেন ফিতনার আশংকা হলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *